Blog

ছাত্রদল ঘৃণ্য রাজনৈতিক অপপ্রচার চালাচ্ছে:

প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে ছাত্রদল পরিকল্পিতভাবে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালিয়ে ‘মিডিয়া ট্রায়ালে’ লিপ্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে প্ল্যাটফর্মটি। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগেই এ ধরনের প্রচারণাকে নিন্দনীয় এবং অনভিপ্রেত বলে উল্লেখ করেছে তারা।


এ ঘটনাকে ছাত্রদলের ঘৃণ্য রাজনৈতিক অপপ্রচার বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা।


রোববার (২০) রাতে রাজধানীর রূপায়ন টাওয়ারে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।


শনিবার রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ (২২) ছুরিকাঘাতে নিহত হন। এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা জড়িত বলে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব অভিযোগ করেন।


এ ছাড়াও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে অভিযুক্ত করে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।


এরই প্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উমামা ফাতেমা বলেন, জাহিদুল ইসলামের নির্মম হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে ছাত্রদল একটি ঘৃণ্য রাজনৈতিক অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। হত্যার প্রকৃত কারণ, প্রকৃত অপরাধী ও ক্যাম্পাসে সহিংসতা ছড়ানোর পেছনে থাকা বাস্তব চিত্রকে আড়াল করে তারা ঘটনার রাজনৈতিক ব্যবচ্ছেদে মনোযোগী হয়েছে। এমনকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গণঅভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে এই হত্যার মদদদাতা হিসাবে অভিযুক্ত করে যাচ্ছে।


তিনি বলেন, হামলার প্রথম সিসিটিভি ফুটেজে যাদের সরাসরি আক্রমণ করতে দেখা যায়, তাদের সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই। ঘটনাস্থলে প্রদর্শিত দ্বিতীয় ফুটেজে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানা কমিটির সাথে যুক্ত ও প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের ছাত্র হৃদয় মিয়াজি এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সদস্য সোবহান নিয়াজ তুষার ছিলেন।


একইসাথে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল কর্মী তাওহিদ, প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী ইমতিয়াজ জাহিদ এবং আরও কিছু সাধারণ শিক্ষার্থীও। তবে তদন্তের আগে আমরা কোনোভাবেই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চাই না যে, কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগেই ছাত্রদল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালিয়ে ‘মিডিয়া ট্রায়ালে’ লিপ্ত হয়েছে, যা নিন্দনীয় ও অনভিপ্রেত।


উমামা আরও বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত যে-ই হোক, তাদের রাজনৈতিক পরিচয়ের উর্ধ্বে গিয়ে, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনতে হবে। যেহেতু ক্যাম্পাসে এক শিক্ষার্থী হত্যার মতো গুরুতর অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উপস্থিত সকলকে—তা তারা যে সংগঠনেরই হোক—তদন্তের আওতায় আনা অবশ্যই যুক্তিযুক্ত।


তিনি বলেন, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল একটি পরিকল্পিত বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা শুরু করেছে। তারা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’কে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে সাধারণ ছাত্রদের ন্যায্য দাবি ও গণঅভ্যুত্থানের প্লাটফর্মকে কলঙ্কিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। গণতান্ত্রিক ছাত্রসংগ্রামকে সন্ত্রাস আখ্যা দিয়ে যারা দমন করতে চায়, তারাই প্রকৃত অর্থে সহিংসতার পৃষ্ঠপোষক।


এই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি কোনো নিরীহ শিক্ষার্থী যেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বা মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার না হয়, তার আহ্বান জানিয়েছেন উমামা। একইসাথে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রভাব না খাটিয়ে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং প্রমাণ-ভিত্তিক তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।


সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিষয়ক সেলের সম্পাদক হাসান ইনাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য মইনুল ইসলাম, সিনথিয়া জাহিন আয়েশা, সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক এম এইচ মঞ্জুর, বনানী থানার আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান জয় প্রমুখ।


বাংলাদেশ সময়: ০০৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২৫

এফএইচ/এমজেএফ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button